এক ভাইকে জানি, যিনি দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে Biotech & Genetic Engineering-এ দুর্দান্ত Result নিয়ে পড়শোনা শেষ করেছেন, পাশাপাশি বিদেশের নামি এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পেয়েছিলেন উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ; কিন্তু এর পরিবর্তে তিনি গ্রহণ করেছেন অন্য আরেকটি সুযোগ।
বর্তমানে একটা ইসলামিক স্কুলে বাচ্চাদের পড়ান। তিনি বাচ্চাদের পড়াতে ভালোবাসেন, এ-কাজ তার খুব ভালো লাগে, ফলে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথেই করেন। তার Salary এ-দেশের গড়পড়তা একজন স্কুল শিক্ষক থেকে খুব বেশি নয়; অথচ তার জীবনে দুনিয়াবি Sense-এ এক বিশাল Career গড়ার সুযোগ ছিল; কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে হয়েছেন মানুষ গড়ার কারিগর।
এই ভাই কি সফল? লোকে বলবে—ভাইটি বোকার মতো কাজ করেছেন, নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছেন… ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরেক ভাইকে জানি, যিনি BUET থেকে Engineering পাশ করে দেশি-বিদেশি নামিদামি Company-তে High Salary-র জব করতেন একসময়, বর্তমানে ভাইটি মানুষকে আরবি শিখিয়ে বেড়ান। তিনি তার নিজের বর্তমান কাজকে ভালোবাসেন এবং বেশ আন্তরিকতার সাথে করেন।
এই ভাই কি সফল? লোকে বলবে, ভাইটি বেশ আহাম্মকের পরিচয় দিয়েছেন—নিজের হাতে নিজের Career ধ্বংস করেছেন।
.
সফলতা আসলে কী? সফল হতে কী লাগে? আমাদের Motivational Speaker-রা বলেন—যা মন থেকে ভালোবাসো, তাই করো। কিন্তু সমাজের লোকজন বলবে—যে-কাজে Salary বেশি, সেই কাজই করো।
এ-দেশের Graduate-রা বেশ দোটানায় থাকে। যখন নিজের পড়ার সময় Humanities, Science বা Commerce বেছে নিতে হয়, তখন শিক্ষার্থীদের এইসব বিভাগের ভবিষ্যৎ Career-সম্পর্কীত কোনো Pre-requisite Knowledge থাকে না। ফলে অনেকেই শিক্ষক কিংবা পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে এই তিন বিভাগের যেকোনো একটা বাছাই করে।
অনেকেই হয়তো ভাবে—বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নিজের পছন্দমতো Subject choose করবে; কিন্তু এ-দেশে সে-সুযোগও বেশ অপ্রতুল। প্রথমত Humanities-এর কারও Science বা Commerce কোনো Subject বাছাই করার সুযোগ নেই, আবার Commerce কেউ চাইলেই আর Science-এর কোনো Subject-এ পড়তে পারে না।
Public বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন Unit-এ পরীক্ষা দেওয়ার পরেও পছন্দের Subject পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। কেউ হয়তো অর্থনীতি-তে পড়ার উদ্দেশ্যে ঘ Unit-এ পরীক্ষা দেয়, আর পেয়ে যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান। বাংলাদেশের বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থীই এমন Subject-এ পড়তে বাধ্য হয়—যা হয়তো তার পছন্দ না। আবার অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের দুই বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারে—সে যে Subject-এ পড়ছে, তা আসলে তার জন্য না।
এই নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশার অন্ত নেই। এমনিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা Skill-based না, ফলে কর্মজীবনে গিয়ে Fresh Graduate-দের চাকরি পেতে বেশ হিমশিম খেতে হয়।
চাকরি পাওয়ার জন্য কী কী Skill শিখতে হবে—তা-ও আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো থেকে জানতে পারে না।
.
বর্তমানে বাংলাদেশে মোট বেকার সংখ্যা প্রায় 8 কোটি, তার মধ্যে প্রায় ২৭ লক্ষ হলো শিক্ষিত বেকার। চাকরিপ্রার্থীরা ভাবে—দেশে চাকরি নেই, আর চাকরিদাতারা চাকরি দেওয়ার মতো লোক খুঁজে পায় না।
চাকরিদাতারা Readymade employee খোঁজে—যাতে তাদের Training দেওয়ার খরচটা বেঁচে যায়; তাদের বলি—Sorry! আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে Readymade employee তৈরি হয় না।
আমাদের Graduate-দের থেকে World-class skill আশা করা হয়; অথচ তাদের বেতন Local Quality-এর দেওয়া হয়।
মেয়ের বাবারা High-paid salary-ওয়ালা জামাই খোঁজে, তাই সহজে আর এ-দেশের ছেলেরা বিয়েও করতে পারে না; আর সাথে বিভিন্ন সামাজিক চাপের পাশাপাশি নিজের পরিবারের প্রত্যাশার চাপ তো আছেই। বেশি বেতনের Career গড়তে গড়তে বয়স হয়ে যায় ৩০-৩৫। ততদিনে হতাশায় আর টেনশনে কারও কারও চুল পাকে, কারও টাক পড়ে, আর কারও পেট বাড়ে, কেউ হয়ে যায় শীর্ণকায়!
.
আসলে রিজিকের মালিক কে? আল্লাহই তো নাকি?
মানুষ বোধ হয় এই ব্যাপারটা খুব একটা বিশ্বাস করে না!
যারা মুখে এসব বুলির প্রচারক, তাদেরও একটা বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠী এ-ব্যাপারটা বিশ্বাস করেন বলে মনে হয় না। আসলে গোটা একটা Corrupted ভোগবাদী System-এর অংশ হয়ে নিজের প্যাশন অনুযায়ী কাজ এবং সহজ বিয়ের বুলি অনেকটাই হাস্যকর। এইসব Motivation-এর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই!
মানুষ বোধ হয় এই ব্যাপারটা খুব একটা বিশ্বাস করে না!
যারা মুখে এসব বুলির প্রচারক, তাদেরও একটা বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠী এ-ব্যাপারটা বিশ্বাস করেন বলে মনে হয় না। আসলে গোটা একটা Corrupted ভোগবাদী System-এর অংশ হয়ে নিজের প্যাশন অনুযায়ী কাজ এবং সহজ বিয়ের বুলি অনেকটাই হাস্যকর। এইসব Motivation-এর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই!
তো, আমরা কী করব? আমাদের তো ভরসা একজনই, আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা। আপনি তো মানুষের শতশত প্রত্যাশাকে Satisfy করতে পারবেন না। আপনি তো হাজারো অভিযোগ আর সওয়ালের জবাব দিয়ে মানুষকে খুশি করতে পারবেন না। আপনার রিজিক তো নির্ধারিত, আর সেটা আসমান থেকেই আসে।
সুতরাং আপনার Interview আসমানের মালিককেই দিন। একমাত্র আল্লাহই আপনার কাজের ফলাফল আর Salary দেখে আপনাকে মূল্যায়ন করেন না, তিনি মূল্যায়ন করেন আপনার যোগ্যতা আর প্রচেষ্টাকে। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুয়া করুন, আর সেই সাথে নিজের যোগ্যতাকে বাড়িয়ে চলুন। মানুষ হাজারটা কথা বলবে, জাস্ট শুনে যান। মনে রাখবেন—মানুষ আপনাকে রিজিক দেয় না, রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ।
সিয়ান | বিশুদ্ধ জ্ঞান | বিশ্বমান

Comments
Post a Comment