Skip to main content

বর্তমান প্রেম-পিরিত বিষ ছাড়া কিচ্ছুই নয়

ভূমিকা:

আল্লাহর ৯৯টি নামের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে আদ-দ্বর (الضر) অর্থাৎ ক্ষতিসাধনকারী তিনিই ক্ষতির উদ্ভাবক, তাঁর সেই ক্ষতিকারক সৃষ্টির মধ্যে 'বিষ' অন্যতম
আমরা সকলে তো নিশ্চই একটি সাধারণ 'বিষ'-এর সংজ্ঞা জানি এবং তা সহজ-সরলভাবে বর্ণনাও দিতে পারি এটিও স্বাভাবিক যে, বিষ অনেক ধরণের হতে পারে, যেমন:- রাসায়নিক, জৈবিক, ধাতু, গ্যাস, ইত্যাদি এগুলো তো সাধারণত প্রাকৃতিক হয়, যা আমাদের মূল বক্তব্যের বাহিরে চলে যায়
এখন আসল বক্তব্যে আসি; মানুষদের নেতিবাচক আচরণ বা ব্যাবহারও কিন্তু (যা কিনা আল্লাহর নাফরমানি হয়) একধরনের বিষ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে তেমনই এক ধরণের বিষ যখন জনসাধারণের নিকট সর্বসময় (বিজ্ঞাপন, নাটক, সিরিয়াল, চলচ্চিত্র, গান, ইত্যাদির মাধ্যমে) বাহ্যিকভাবে সুখকর প্রদর্শিত করা হয় তখন, অনেকেই সেই 'বিষের সংজ্ঞা' জানবার সত্ত্বেও তা (একবারের জন্য হলেও) 'উপভোগ' করার উপক্রম নিতে চাইবে যারা এই উপক্রম নেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তাদের মধ্যে প্রায় সকলেই এই বিষকে বিষ হিসেবে উপলব্ধিই করতে পারে না (বিভিন্ন মিডিয়া তাদেরকে কানামাছি বানিয়ে ফেলার ফলশ্রুতিতে)
এখন এই প্রশ্ন-তে আসা স্বাভাবিক যে, তারা কিভাবেই বা আমাদেরকে এরকম একটি বিষের প্রতি সম্পূর্ণ ইতিবাচক রূপে আকর্ষিত করেছে?
উত্তরটা অত্যন্ত সহজেই দেওয়া যায়
দেখুন, আমাদের আশেপাশের যেকোনো মিডিয়া-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করলেই এই বিষয়টা উপলব্ধি করতে বেশিক্ষণ লাগবার কথা না  যে 
(ততো বেশি পর্যবেক্ষণ করবারও প্রয়োজন নেই) 
তারা তথাকথিত প্রে-নামক এই বিষটি অগণিত উপায়ে সুখের একমাত্র উৎস বানানোর প্রচেষ্টায় মগ্ন রয়েছে
এই ধরনের তথাকথিত প্রে-কে আমি ঠিক সেরকম উল্লেখ করতে চাই না, কারণ এই রকম ভালবাসায় স্বার্থপরতা-টি বেশি উপস্থিত 
(আসল প্রে-ভালবাসায় মানুষ প্রাকৃতিকভাবেই নিজের চেয়ে যাকে ভালবাসা হয়, তার প্রতি খুব যত্নশীল হয়);
বরং নিম্নের কথাগুলোতে একে আমি বিষ হিসেবেই চিহ্নিত করে বলে ডাকবো


দুনিয়াবী বিষক্রিয়া:

প্রত্যেকটি বিষের অবশ্যই কোন না কোন প্রভাব থাকে, প্রভাবটি নির্ভর করে বিষের মাত্রা ক্ষমতা অনুযায়ী
তথাকথিত 'প্রে'-এর ক্ষেত্রে এই প্রভাবটি অত্যন্ত ব্যাপক আকারে উপস্থিত রয়েছে প্রথমত, এসব করলে দুজনের মনের মানসিক প্রশান্তির উপরই আল্লাহর অভিশাপ পড়ে এই অভিশম্পাতের কারণে মানসিক-দিকের যাবতীয় বরকত থেকে বঞ্চিত হতে হয় এবং এরকম হলে যার উপর থেকে বরকত উঠে গিয়েছে তা তার অশান্তির মূল কারণে পরিণত হয়ে যায় স্বয়ং মানসিক অবস্থাই যদি অশান্তির মূল কারণ হয়, তবে কী রকম বেহাল দশারই না উৎপত্তি হবে; তা অনুধাবন করার জন্য কেবল ক্ষণিক চিন্তা করই যথেষ্ট বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি

দ্বিতীয়ত, চরিত্রের ক্ষতিসাধন হবার ফলে যেমন ভাবে নিজের মূল্যবান সম্মান হারানো হচ্ছে, ঠিক তেমন ভাবে আল্লাহর চরম নাফরমানিও করা হচ্ছে; যেখানে আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের নযর লজ্জাস্থান হেফাযতের জন্য বিশেষ জোর দিয়েছেন তিনি বলেছেনঃ মুমিনদের বল তাদের দৃষ্টি নিম্নগামী করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র, তারা যা কিছু করে সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত
–[২৪তম সুরাহ নূর, আয়াত-৩০]

তৃতীয়ত, নিজের উপর জুলুম চালানো তো হচ্ছে, তার পাশাপাশি যার সাথে এই বিষ 'উপভোগ' করা হচ্ছে তার উপরও জুলুম করা হচ্ছে সাধারণ জুলুম থেকে এর পার্থক্যটি হল, দুজনই ধরণের জুলুমের ব্যাপারে অবগত নয় এবং তা কোনভাবে উপলব্ধিও করতে পারছে না তাই তাদের হারাম এই সম্পর্কটা এখনও নির্দ্বিধায় চালিয়ে যাচ্ছে মূলত, এভাবে বিষয়টাকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে; দুজনই নিজেদের প্রতি একদমই না জেনে অসচেতনভাবে জুলুম চালাচ্ছে
এখানে জুলুমটা হচ্ছে মানসিক এবং আধ্যাত্মিক অনেক তরুণ-তরুণী মানসিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়ে কব্জা করা হচ্ছে তাদের পবিত্র মন এবং এরই জন্য সেই পবিত্রতা প্রতিনিয়ত তিলে-তিলে দূষিত ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে
মানসিক নিয়ন্ত্রন যথা:- সারাক্ষণ প্রেমিক বা প্রেমিকার ব্যাপারে চিন্তা করা, তাদের নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করা, তাদের সাথে কথা বলার ব্যাপারে পরবর্তী সুযোগ খুঁজে বেড়ানো, তাদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য টাকা খরচ করা, ইত্যাদি
আধ্যাত্মিক ব্যাপারটি একটু জটিল, তাই এটি আলাদাভাবে নিম্নে বর্ণনা করা হলো


এই বিষ আখিরাত বরবাদ করে দেয়:

রাসুল (সাঃ) এর একটি হাদিস অনুযায়ী, বিষে আসক্ত মানুষের ধারা বহুমুখী যিনার গুনাহ করা হয় যেমনঃ প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে হাটাহাটি করা পায়ের যিনা, তাদের মধ্যেকার কথাবার্তা জিহ্বার যিনা, হাত ধরাধরি করা হাতের যিনা, একে অপরের কথা শোনা কানের যিনা, এবং একে অপরকে দেখাদেখি করা চোখের যিনা আল্লাহ কুরআনে বলছেন:
"
আর যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ"
–[১৭তম সুরাহ ইসরা, আয়াত-৩২]

তারা কত সুন্দর ভাবেই না যিনার ধারের কাছে থাকা সকল গুনাহ ইচ্ছামতো কামাই করে নিচ্ছে নিজের আমলনামায়, যেন আল্লাহর প্রতি বিন্দুমাত্রও ভয় নেই এদের এবং তাঁর দেয়া আদেশ-নিষেধ বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেবারও প্রয়োজন বলে মনে করে না! 
একবার চিন্তা করে দেখবেন যে তিলে-তিলে কী পরিমান গুনাহ কামাই করা হয়ে যেতে পারে এসব অপকর্ম করার মাধ্যমে 

অন্যদিকে অনেকসময় আমাদের অজান্তেই এই বিষ শিরকে রুপান্তরিত হয়
কিভাবে? বলছি...
যদি একজন ছেলে-মানুষ একজন মেয়ে-মানুষের প্রতি হারামভাবে বিষাক্ত-সম্পর্কে জুড়ে যায়, তবে বেশ কয়েকদিন মজ-মাস্তি করার পর এই গর্হিত চিন্তাভাবনা শয়তান তার মাথার ভিতর গেঁথে দেয় যে,
তাকে ছাড়া আমি একদিনও বাঁচবো না
অথবা উল্টোভাবে বললে ব্যাপারটি আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে
যখন একজন মেয়ে-মানুষ একজন ছেলে-মানুষের প্রতি হারামভাবে বিষাক্ত-সম্পর্কে জুড়ে বেশ কয়েকদিন পার করে
তখন শয়তান তার মাথার ভিতর এই গর্হিত চিন্তাভাবনা গেঁথে দেয়,
তাকে ছাড়া আমি কোনদিনও বাঁচবো না বিবাহ করতে হলে আমি কেবল তাকেই করবোতা যেকোনো মুল্যেই হোক না কেন 
সেটি (তথাকথিত লব-ম্যারিজ) করার সর্বোচ্চ - মাস পরে অর্থহীন আফসোস করে বাকি জীবনে কষ্টের ভোগান্তি ভুগে যায়
এর কারণও যথাযথ; অবৈধভাবে পালিয়ে গিয়ে আল্লাহর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজের বিবাহ নিজেই সম্পন্ন করলে বাকি জীবন জ্যান্ত জাহান্নামের ভোগান্তি পোহাতেই তো হবে, তা ছাড়া আর কোন ভালো বিকল্প পরিণতিও নেই আল্লাহর বিরুদ্ধাচারণ করে কুফরি স্তরে এতো বড় নাফরমানি করার কারণে
সেই অবৈ পন্থায় বিবাহের মধ্যে বরকত তো দূরে থাক, সামন্যতম শান্তিও লাভ করা সম্ভব নয় আর এই বিষের মধ্যে যে সুখ আসে, সেটি শান্তির সুখ বললে ভুল হবে, বরঞ্চ এটি শয়তানের প্রদত্ত মোহের ধোঁকা ব্যতীত কিচ্ছুই নয়
আরেহ! একজন সাধারণ মানুষের না থাকার সাথে না বাঁচার কথা জুড়িয়ে দিলে তা (গুরুত্বহীনভাবে চিন্তা ও বিবেচনা করলেও) শিরকের আওতায় এমনিতেই পড়ে যায় তাছারা, একজন অতি সাধারণ মানুষের জন্য তো বোধহয় সে তার সম্পূর্ণ জীবনটাই কল্যাণহীনভাবে উৎসর্গ করে দিয়েছে
এরকমটি করলে কল্যাণ বা উপকার দুজনার একজনেরও হবে না, হবে শুধু কুফরি  (অন্তরে থাকা সুপ্ত) শিরক
একজন মুসলমান হয়ে দুটি সর্বোচ্চ স্তরের গুনাহ করলে এতো বড় হতভাগা এবং কপালপোড়া দুনিয়াতে বোধ হয় আর হতে পারে না
শয়তান ব্যাটা তখনই পরিতৃপ্ত হয় যখন সে একজন মুসলমানকে দিয়ে কুফরি বা শিরক (মূলত মানব-বান্দাদের শিরক করানোর ক্ষেত্রে তার আগ্রহ বেশি) করিয়ে নিতে পারে


বিষ থেকে নিস্তার পাবার বাঁচবার উপায়ঃ

প্রথম পূর্বশর্ত হচ্ছে, আল্লাহর স্মরণে (যিকির-আযকার) যত বেশি সম্ভব ততো বেশি নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে এবং যতক্ষণ বেশি সম্ভব ততক্ষণ ধরে পবিত্রতা বজায়ে রাখতে হবে (অযু করা এবং তা সচেতনভাবে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে; পারলে বা সম্ভব হলে সারাদিনই সর্বোত্তম পন্থা) যাতে করে অন্তরে বাস্তব প্রশান্তি আসতে পারে
এতে করে যেমন ভাবে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে স্বয়ং আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখবে, তার পাশাপাশি আল্লাহর নিকট প্রতিনিয়ত ইখলাসের সাথে দুআ করলে বিষ থেকে নিস্তার পাবার ধাপসমূহও অন্তরে উপস্থিত হবে, ইনশাআল্লাহ
আল্লাহ তাদেরকে আশ্বাস দিয়ে বলছেন:

"যারা কোন পাপ কাজ করে ফেললে কিংবা নিজেদের প্রতি যুলম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ব্যতীত গুনাহসমূহের ক্ষমাকারী কেই বা আছে?
এবং তারা জেনে শুনে নিজেদের (পাপ) কাজের পুনরাবৃত্তি করে না"
-[
৩য় সুরাহ ইমরান, আয়াত-১৩৫]

"হে নবী! বলো, (আল্লাহ বলেছেন) হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তারা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না
আল্লাহ সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন তিনি অতীব ক্ষমাশীল, পরমদয়ালু"
-[
৩৯তম সুরাহ জুমার, আয়াত-৫৩]

এর একটি যথাযথ কারণ হচ্ছে যে, ভিন্ন-ভিন্ন মানুষদের ক্ষেত্রে
বিষের এই প্রভাবটিও ভিন্ন-ভিন্ন হয়ে থাকে,
তাই আমি কেবল এর থেকে বাঁচবার মূল অংশটুকুই বিশ্লেষণ করতে পারবো

দ্বিতীয় পূর্বশর্ত হচ্ছে, পর্দাশীল হওয়া;
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি যে দৈহিক পর্দার ব্যাপারটি
শুধু নারীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য
কিন্তু, পুরুষদেরকেও আল্লাহ ঠিক একই ভাবে যে চক্ষু-পরদার ব্যাপারে জোর দিয়েছে, তা অনেক মুসলিম ভাইয়েরা একদমই অবগত নন
আল্লাহ সুরাহ নূর-এর ৩০ এবং ৩১ নম্বর আয়াতে যথাক্রমে পুরুষদের এবং নারীদের চক্ষু-পর্দা দেহ-পর্দার ব্যাপারে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন
যাবের (রাঃ) একটি হাদিসে বর্ণনা করেন যে সে একদিন রাসুল (সাঃ) কে বেগানা নারীর প্রতি ভুলবশত দৃষ্টিপাতের ব্যাপারে জিজ্ঞেসাবাদ করেছিলো,
তখন রাসুল (সাঃ) উত্তর দেয় যে সে যেন তখন তাৎক্ষণিতভাবে তার চক্ষু নামিয়ে নেয় বা অন্যদিকে সরিয়ে নেয় (কোন কিছু বুঝবার আগে)
চক্ষুপর্দার বিশেষ অবদানে এই বিষ থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি আল্লাহর অনুগ্রহে অনেক বিষয়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মনোযোগ দেয়া যায়; যা আমাদেরকে অনেকাংশে সবার থেকে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে
চক্ষু-পর্দা দেহ-পর্দা, দুটির অবদানে সমাজে অশান্তি বা ফিতনা-ফাসাদ হবার সম্ভাবনা প্রায় শুন্যের কোঠায় চলে যায়, আলহামদুলিল্লাহ্‌!
কারণ, একটি রাস্ট্র যতো আল্লাহর প্রদত্ত নিয়ম অনুযায়ী শালীনতার প্রতি কঠোরতা প্রয়োগ করবে; ততো বেশিক্ষণ ধরে উন্নতি, শান্ত পরিবেশ, শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা, এবং আরও অনেক ইতিবাচক গুণ বজায়ে রাখতে পারবে
যেমনটি সালাহদিন আইয়ুবি (রহ) বলেছিলেন, একটি রাস্ট্র বা গোত্র যুদ্ধ ছাড়া ধ্বংস করবার জন্য অশ্লীলতা বা অশালীনতা ছড়ানোই যথেষ্ট
আল্লাহ সুরাহ নূরের ১৯ নম্বর আয়াতে বলেনঃ

যারা এই ব্যাপারটি পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার বিস্তৃতি ঘটুক; তাদের জন্য আছে দুনিয়া  আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তি আল্লাহ জানেন আর তোমরা জান না

সর্বশেষে বলতে চাই, তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হচ্ছে ধৈর্যশীলতা কৃতজ্ঞতা
যে ব্যাক্তি ধৈর্যধারণের মাধ্যমে আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ ভরসা রাখতে সক্ষম হয়,আল্লাহ তার প্রতি অত্যন্ত খুশি হন অন্যদিকে, কোন ব্যাক্তি আল্লাহর প্রতি যে কোন কিছুর ব্যাপারে খাস দিলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আল্লাহ বান্দার প্রতি পরবর্তীকালে তদানু্যায়ী বা তার চেয়ও বেশি নিআমত বর্ষণ করে
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা আল-কুরআনের অনেক জায়গায় এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন নিম্নে তার অন্যতম আয়াতসমূহ দিয়ে আমার লেখনীর ইতি টানলামঃ

হে মুমিনগণ! ধৈর্য সলাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন
-[২য় সুরাহ বাকারাহ, আয়াত-১৫৩]

তোমাদেরকে ভয় ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ফল-ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি (এসবের) কোনকিছুর দ্বারা নিশ্চয়ই পরীক্ষা করব, ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর
-[২য় সুরাহ বাকারাহ, আয়াত-১৫৫]

তোমরা নিজেদের মুখ পূর্ব দিকে কর কিংবা পশ্চিম দিকে এতে কোন কল্যাণ নেই বরং কল্যাণ আছে এতে যে, কোন ব্যক্তি ঈমান আনবে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাবসমূহ নাবীগণের প্রতি এবং আল্লাহর ভালবাসার্থে ধন-সম্পদ আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম-মিসকীন, মুসাফির যাত্রাকারীদের এবং দাসত্বজীবন হতে নিস্কৃতি দিতে দান করবে এবং নামায কায়িম করবে যাকাত দিতে থাকবে, ওয়াদা করার পর স্বীয় ওয়াদা পূর্ণ করবে এবং অভাবে, দুঃখ-ক্লেশে সংকটে ধৈর্য ধারণ করবে, লোকেরাই সত্যপরায়ণ আর লোকেরাই মুত্তাকী
-[২য় সুরাহ বাকারাহ, আয়াত-১৭৭]

হে মুমিনগণ! ধৈর্য অবলম্বন কর, দৃঢ়তা প্রদর্শন কর, নিজেদের প্রতিরক্ষাকল্পে পারস্পরিক বন্ধন মজবুত কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার
-[৩য় সুরাহ আল ইমরান, আয়াত-২০০]

আমি তোমাদেরকে যমীনে প্রতিষ্ঠিত করেছি; আর সেখানে তোমাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করেছি, অথচ তোমরা খুব সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো
-[৭ম সুরাহ রফ, আয়াত-১০]

আমি লুকমানকে প্রজ্ঞা দান করেছিলাম (তাকে বলেছিলাম) যে, তুমি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে তা নিজের কল্যাণেই করে আর কেউ অকৃতজ্ঞ হলে (সে জেনে রাখুক যে) আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, প্রশংসিত
-[৩১তম সুরাহ লুকমান, আয়াত-১২]

অতঃপর তিনি তাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছেন আর তার ভিতরে স্বীয় রূহ হতে ফুঁক দিয়েছেন, আর তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণেন্দ্রীয়, দর্শনেন্দ্রিয় অন্তঃকরণ; কৃতজ্ঞতা তোমরা সামান্যই প্রকাশ কর
-[৩২তম সুরাহ সাজদাহ, আয়াত-৯]

তোমার প্রতিপালক নিশ্চয়ই মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু তাদের অধিকাংশই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না
-[২৭তম সুরাহ নামল, আয়াত-৭৩]

স্মরণ কর, যখন তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেন, যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের জন্য (আমার নি‘য়ামাত) বৃদ্ধি করে দেব,
আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও (তবে জেনে রেখ, অকৃতজ্ঞদের জন্য) আমার শাস্তি অবশ্যই কঠিন।
-[২৭তম সুরাহ ইব্রাহীমআয়াত-৭]

মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে(ডুবে) আছে, কিন্তু তারা নয় যারা ঈমান আনে সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়
-[১০৩য় সুরাহ আসর, আয়াত-, ৩]

Comments