চশমাটায় অনেক ময়লা জমেছে। খুবই পুরু একটা ময়লার স্তর। নাহ, এটা তো ধুলো নয়, নয় কোনো পানীয়। তবে কি এই ময়লা? যার জন্য চশমাটা ঘোলাটে হলো? Hmm, এটা অন্য ময়লা। এই ময়লা দেখতে দিচ্ছে না ভালোটাকে, দেখাচ্ছে শুধু মন্দটাকে। এই ময়লা চর্মচক্ষুর সাথে সাথে মায়াজাল বিছিয়েছে অন্তরের চক্ষুতেও। কি সেই ময়লা?
এই ময়লা আসলে দুনিয়ার কোনো ময়লা নয়! এটা এমন এক ময়লা যা সবাই টেরও পায় না। কখন যেন তা অন্তরাত্মাকে ঘোলাটে করে দেয়। এই ময়লা তো কুদৃষ্টির ময়লা। এই ময়লা তো হারামের প্রতি দৃষ্টিপাতের ফলে জমা ময়লা।আফসোস আর আফসোস এই ময়লা পরিষ্কার তো করছিই না, বরং দিনের পর দিন ময়লাটকে আরো উৎসাহের সাথে, আগ্রহের সাথে, কৌতুহলের সাথে নিজের চশমাটার সাথে, চোখের সাথে, অন্তরের সাথে লেপ্টে নিচ্ছি!
আহ, কত আনন্দ তাইনা রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়া মেয়েগুলোর দিকে আঁড়চোখে তাকাতে, কত জোস! তাই না? কত মজা তাই না স্মার্টফোনের নীল দুনিয়ার সেইসব দৃশ্যে? আসলে, আমার অন্তরটাকেই তো পাপের কালিমা দ্বারা নিকশ কালো করে ফেলেছি! তাইতো এই ভয়ংকর ময়লা গুলোকেও আমার কাছে লাগে WOW! এগুলো আমার কাছে ফূর্তির বিষয়। একবারও কি ভেবে দেখা হয়েছিল, আমি নিজের উপর ঠিক কতটা নোংরা স্তূপ চাপিয়েছি? কেন করছি এগুলো? ওই 10 sec রাস্তার 'Gorgeous' মেয়েটার দিকে না তাকালে কি হতো? ওই 20 min Video clip আমাকে ঠিক কোন আনন্দটা দিচ্ছে??
আসলে কোনো আনন্দই দিচ্ছে না।
দিচ্ছে শুধু দুনিয়ার জীবনে হতাশা, ডিপ্রেশন, গ্লানি আর অনন্তকালের সেই যে এক জীবন; যার শুরু আছে শেষ নেই,তার জন্য কামাই করছে ভয়ংকর রকমের শাস্তি।
একবারও কি ভেবে দেখেছি জান্নাতের সেই সুশোভিত কাননে হেঁটে বেড়ানো অপরূপা,মায়াবী সেই হুরেদের কথা? নাহ,ভাবি নি। ভাবলে আজ দুনিয়ার ভূতগুলোকে না দেখে দৃষ্টিটাকে কান ধরে নিচে নামিয়ে রাখতাম? কেন ভাবিনি? কারণ আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা'য়ালার কালামের সেই বাণী আমার হৃদয়ের কর্ণ শ্রবণ করে নি। কি সেই বাণী?
"মুত্তাকীরা তো থাকবে নিরাপদ স্থানে- উদ্যান ও ঝর্ণার মাঝে, তারা পরিধান করবে মিহি ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং মুখোমুখি হয়ে বসবে। এইরূপই ঘটবে; আমি এদেরকে সঙ্গিনী দান করব আয়তলোচনা হুর" (সুরাহ আদ-দুখান; ৪৪ঃ৫১-৫৪)
আহ জান্নাতের সেই উদ্যান আর ঝর্ণা, জান্নাতের সেই পোশাক, সেই সঙ্গিনী, তা কি এই দুনিয়া বাগান, দুনিয়ার ঝর্ণা, দুনিয়ার পোশাক, দুনিয়ার নোংরা হারাম সঙ্গিনীর সাথে তুল্য?? কখনোই নয়!
তবে কেন আমি নিজ দৃষ্টি অবনত করবো না? কেন জান্নাতের সেই আয়ত নয়না, মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়া হুরের জন্য, সেই হুরকে পাওযার জন্য নিজের সমস্তটা দিয়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখব না? কেন??
"মু’মিনদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে; এটাই তাদের জন্যে পবিত্র। এরা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" (সুরাহ আন নূর - ২৪ঃ৩০)
© আবদুল আহাদ বারিকুল (Source)
Comments
Post a Comment